কলকাতা শহরের লাইফলাইন হলো মেট্রো। করোনাকালের আবহে বিধিনিষিধের ফলে কমে গিয়েছিল মেট্রোর যাত্রী সংখ্যা আর এই বিধিনিষেধ উঠতেই ফের নিজস্ব চেহারায় দেখা গেছে মেট্রোকে। আর এরই মধ্যে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের মধ্যে। যাত্রী সংখ্যা বাড়লেও, তুলনামূলকভাবে রেকের সংখ্যা বাড়ানো হয়নি গত কয়েক বছরে ।যাত্রী সুবিধার কথা ভেবে ইতিমধ্যে তুলে দেওয়া হয়েছে নন-এসি রেক। এসি রেক যা ছিল, তাতে যাত্রী পরিষেবা কতটা স্বাভাবিক রাখা যায়, তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল সন্দেহ। এমন অবস্থায় আরও বেশি করে এসি রেক আনার সিদ্ধান্ত নেন মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৯ সালে চীন থেকে জাহাজ পথে কলকাতায় নিয়ে আসো ডালিয়ান রেক হলো শেষ সম্বল। আগামী বছরের মধ্যে সারা দেশে ৭৫টি ‘বন্দে ভারত’ এক্সপ্রেসের বেশির ভাগের জোগান দেওয়ার কথা চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরির অর্থাৎআই সি এফ সংস্থার। এবং অন্যদিকে ওই কারখানাতেই তৈরি হয় কলকাতা মেট্রোর রেক। মেধা সিরিজের ১৮টি রেক চলে আসার পরে দ্বিতীয় পর্বে আরও ২২টি রেকের কাজ তুলে দেওয়া হয়েছে ওই সংস্থার হাতে। কিন্তু আই সি এফ-এর অত্যধিক কাজের চাপ থাকায় অবশেষে চিনা সংস্থা ডালিয়ানের দিকে ঝুঁকতে হলো মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষকে।
গত তিন বছর আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালে ডালিয়ান রেক এলেও, কোনও এক কারনে নোয়াপাড়া কারশেডে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল রেকগুলি। এই প্রশ্নের উত্তরে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন যে, নতুন রেক এলে ‘রিসার্চ, ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অর্গানাইজ়েশন’ (আরডিএসও)-এর নির্দেশ মেনে প্রায় ৩২ রকম পরীক্ষা করতে হয়। পরীক্ষার সময় যদি কোনও সমস্যা দেথা দেয়, তাহলে করতে হয় তার মেরামতও যাবতীয় পরীক্ষার ফল ইতিবাচক হলে তার পরেই রেক ব্যবহারের ছাড়পত্র মেলে।। যদিও সমস্ত পরীক্ষায় রেকটি পাস করে যায়, তবেই মেলে ব্যবহারের ছাড়পত্র, বুধবার জানান পূর্ব রেল তথা কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার অরুণ অরোরা, তিনি আরও জানান ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে জোকা-তারাতলা মেট্রোপথের যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলা হবে। তারপরে বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরুর কথা ভাবা হবে।পুরনো রেকগুলির তুলনায় অনেক বেশি অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এই ডালিয়ান রেকে। মেট্রো সূত্রে খবর, পুরনো রেক একসঙ্গে প্রায় দু’হাজার যাত্রী বহন করতে পারত, কিন্তু এই রেক একসঙ্গে বহন করবে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি যাত্রী । রেকে থাকছে সিসিটিভি, টক ব্যাকের সুবিধা , সঙ্গে থাকছে ২৫ টনের শক্তিশালী এয়ার কন্ডিশনিং ব্যবস্থা এবং অসুস্থ ও বিশেষভাবে সক্ষম যাত্রীদের জন্য হুইল চেয়ারের সুবিধাও।তবে, কবে থেকে এই ডালিয়ান রেকগুলি চলাচল শুরু করবে, তা কিন্তু এখনও জানায়নি মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। আগামী দিনে আরও ১৩টি রেক আসবে বলে জানা গেছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ থেকে।