এপ্রিলের শুরু থেকেই গরমের দাপটে নাজেহাল আমজনতা। এর মাঝেই কয়লা সংকটের জেরে দেশের একাধিক রাজ্যে বিদ্যুত বিভ্রাট।
গ্রীষ্মের প্রচন্ড এই দাবদহের মাঝেই প্রায় 8 থেকে 10 ঘন্টা অন্ধকারে ডুবে রইল পঞ্জাব থেকে হরিয়ানা, অন্ধ্রপ্রদেশ,মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ। অন্যদিকে রাজধানীতেও চরম কয়লা সংকট। যে কোনও সময় জরুরি পরিষেবা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে কেন্দ্রকে চিঠি পাঠাল দিল্লি সরকার।
গ্রীষ্মের শুরুতে প্রায় প্রতি বছরই চাহিদা বাড়ে বিদ্যুতের মজুত থাকা কয়লার জেরেই মেটানো হয় সেই চাহিদা। তবে এই বছরের পরিস্থিতি সামাল দিতে নাজেহাল প্রশাসন। টান পড়েছে কয়লার ভাঁড়ারে,লাফিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা। কিভাবে দেওয়া হবে সামাল, কোন পরিস্থিতির স্বীকার হবে দেশ ? ধন্ধে বিশেষজ্ঞ মহল।
সুত্রের খবর অনুযায়ী, দেশের ১৬৫টি চালু তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে ১০০টিতে মজুত করা কয়লার পরিমাণ কমে আসছে তাত্পর্যপুর্ণ ভাবে। মোট চাহিদার মাত্র 25 থেকে 30 শতাংশ পুরণ হচ্ছে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলি থেকে। ‘ন্যাশনাল পাওয়ার পোর্টাল’ থেকে যে দৈনিক কয়লা জ্বালানি সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়, সেখানেও বলা হয়েছে জ্বালানি সঙ্কট শুরু হয়েছে।
তবে কি কারনে কয়লার সংকট? সুত্রের খবর অনুযায়ী, অর্থের অভাবে কয়লা কিনতে পারছে না বেশ কিছু সংস্থা। প্রায় দু বছর করোনার জেরে বন্ধ ছিল দেশের একাধিক শিল্প, ফলে চাহিদা ছিল অনেকাংশে কম। করোনার ভ্রুকুটি কাটিয়ে এবার ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে শিল্পমহল, ফলে সেখানে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা। কিছু সংস্থা সঠিক সময় কয়লার চাহিদার কথা জানায়নি বলেও শোনা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে এপ্রিল পড়তে না পড়তেই গরমের দাপট বাড়ায় ব্যাপক ভাবে বেড়ছে বিদ্যুতের ব্যবহার এর পাশাপাশি মালগাড়ির অভাবে খনি থেকে কয়লা উত্তোলন করতে না পাড়ার জেরে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছ বলেও মন করা হচ্ছে।
দেশে কয়লার এই ঘাটতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই তৎপর কেন্দ্র। কয়লা সরবরাহি মালগাড়িকে আগ্রাধিকার দিতে বহু প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই রেলের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, আগামী ২৪শে মে পর্যন্ত দৈনিক গড়ে ১৬টি করে প্রায় ৭৫৩টি এক্সপ্রেস এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হচ্ছে। পরবর্তিকালে বিদ্যুতের চাহিদা স্বাভাবিক হয়ে গেলে পুনরায় সেই ট্রেন গুলি ফিরিয়ে আনা হবে।
বিদ্যুতের সংকটের জেরে পঞ্জাব, হরিয়ানা, কর্ণাটক, দিল্লি সহ বেশ কিছু রাজ্যে প্রায় প্রতিদিন বেশ কিছু ঘণ্টা করে ডুবে থাকছে অন্ধকারে। যার জেরে পথে নেমেছে পঞ্জাব, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশের সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে কয়লার ঘাটতির আশঙ্কা করে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে আরবিন্দ কেজরিওয়াল জানায়, বেশ কিছু তাপবিদ্যুত কেন্দ্রে কয়লার অভাব। দ্রুত ঘাটতি না মিললে হাসপাতাল, মেট্রোর মতন জুরুরি পরিষেবা বন্ধ হয়ে জেতে পারে।
দেশজুড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। কয়লা সংকটকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় সরকারকে খোঁচা দিচ্ছে একাধিক বিরোধি দল।