ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় চীনের অধিপত্য কমানোর জন্যই এবার কোয়াডের অন্যতম প্রধান দুই সদস্য রাষ্ট্র ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার এক নয়া প্রচেষ্টা। আজ হায়দ্রাবাদ হাউসে সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে এ কথা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানেজ। যদিও এই সংবাদ মাধ্যমে জানানোর আগেই তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বার্ষিক বৈঠকে বসেছিলেন। তবে এ বিষয়টি বর্তমান ভূকৌশলগত রণনীতির প্রশ্নে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক মহল। দ্বিপাক্ষিক স্তরের ফলে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার যেভাবে ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে তা নিয়ে কিছুটা চাপে রয়েছেন শি জিনপিং সরকারকে।
দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বার্ষিক বৈঠকের পরেই নরেন্দ্র মোদী বলেছেন যে, আমরা নিরাপত্তা প্রশ্নে সামগ্রিক কৌশলগত সম্পর্ক তৈরি করেছি। আজ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সহযোগিতাকে ঘিরেই বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে।তিনি আরও উল্লেখ করেছেন , ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে চর্তুদেশীয় অক্ষ কোয়াড-এর যে পরিমাণ সহযোগিতা রয়েছে তা সত্যিই চমৎকার। আগামী মে মাসেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অস্ট্রেলিয়া সফরে যেতে পারেন, কোয়াড-এর শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে অংশ নিতে। আবার সেপ্টেম্বরে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ফের ভারতে সফরে আসছেন অ্যালবানেজ।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানেজের বক্তব্য, ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে তা বহুস্তরীয় একটি সম্পর্ক। আবার তার মধ্যেও প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতা থেকেই যায়। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সমুদ্রপথে সহযোগিতার যথেষ্ট প্রয়োজন ও গুরুত্ব রয়েছে। দু’দেশের মধ্যে মালাবার নৌ-মহড়া অব্যাহত থাকবে বলেই জানিয়ে দিয়েছেন বিদেশসচিব বিনয় কোয়াত্রা। দু’দেশের শীর্ষ পর্যায়ের ও নৌ-সেনার মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আদানপ্রদানের বাড়ানোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আজ দুই দেশের মধ্যে হওয়া দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরে দুটি দেশের কর্তারা নিজেদের মধ্যে বেশ কিছু সমঝোতা পত্র সই করেছেন। তার মধ্যে সৌরশক্তিতে যৌথ টাস্ক ফোর্স তৈরি, ক্রীড়াক্ষেত্রে সহযোগিতা, বৈদ্যুতিন প্রচার মাধ্যমে পারস্পরিক বিনিময়ের মতো বিষয় রয়েছে। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, অস্ট্রেলিয়া চিনের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ কমিয়ে আনছে এবং এমন পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্য বাড়ানো লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। গত বছর জুনে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রিচার্ড মার্লেস ভারতে এসে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে এক আলোচনায় প্রতিরক্ষা গবেষণা এবং দুই দেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছিলেন। আজ তাকেই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন দুই শীর্ষ নেতা।