অর্থনৈতিক মন্দাতে জর্জরিত দেশ, অস্থিরতার ছাপ আর্থিক বাজারেও, সব মিলিয়ে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে গভীর সংকটে ব্রিটেন। আর যার জেরেই টলোমলো প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের গদি। মাসখানেক আগে গঠন করা ক্যাবিনেট মন্ত্রীরাই এখন তাঁর বিরোধিতায়। ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব রাখার জল্পনা। তবে কি পরিবর্তন হবে ব্রিটেনের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী? পরিবর্তে মসনদে বসবে কে ঋষি সুনক নাকি বরিস জনসন ? ঘোর জল্পনা রাজনৈতিক মহলে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতীয় বংশভূত ঋষি সুনককে হারিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আসন দখল করেন লিজ ট্রাস। প্রধানত কর ছাড় দেওয়া প্রতিশ্রুতি দিয়ে মসনদ জয় করেছিলেন ট্রাস। সেই মতন ক্ষমতায় আসার কয়েক দিনের মধ্যেই কর্পোরেট করের ওপর ৪৫% ছাড়ের ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়াটেংক । যার পরেই ভয়াবহ পতন হয় পাউন্ডের ,একই সঙ্গে বৃদ্ধি পায় সরকারি ঋণের সুদের হার। ভয়াবহ প্রকল্প পরে দেশের অর্থনীতির ওপর ।আর যার জেরেই সপ্তাহখানেকের মধ্যেই বদলে যায় ব্রিটেনের রাজনৈতিক সমীকরণ। প্রধানমন্ত্রীর বিরোধীতায় সরব হয় কনজারভেটিভ পার্টির ১০০ জনের বেশি সাংসদ। ইতিমধ্যেই লিজের বিরুদ্ধে কমিটির প্রধান গ্রাহাম ব্রান্ডির কাছে অনস্থা প্রস্তাব জমা দিতে তারা প্রস্তুত বলেও শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
দেশের অর্থনীতি সংকটে পড়ায় রাজনৈতিক মহলে যখন ঘোর জল্পনা তখনই অর্থমন্ত্রী পদ থেকে কোয়াসি কোয়াটেংক বরখাস্ত করেন লিজ, তার বদলে জেরেমি হান্ট কে দায়িত্ব দেন তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে জেরেমি এক সময় ঋষিকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। প্রধানত ট্রাস্ট বিরোধী বলেই পরিচিত ছিলেন তিনি। সুনক ঘনিষ্ঠকে মন্ত্রিত্ব দিয়ে তবে কি ক্যাবিনেটে নিজের গদি শক্ত করতে চাইছেন ট্রাস?
তবে দেশে যখন অর্থনৈতিক মন্দা ঘোর রাজনৈতিক সংকট তখনো মুখে কুলুপ ঋষি সুনকের। নির্বাচনের আগে লিজ যখন কর ছাড়ের প্রতিশ্রুতিতে বদ্ধপরিকট তখন ঋষির মুখে কর ছাড়ের কোন কথাই শোনা যায়নি। বরং কড় ছাড়ের প্রসঙ্গে ঋষি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, কোভিডের জেরে সারা বিশ্বে অর্থনীতির ওপর বেশ প্রভাব পড়েছে এর মাঝে যখন ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি তখন দেশের আর্থিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে এই মুহূর্তে কর কমানো কোনভাবেই সম্ভব নয়। কিন্তু লিজের জনমহিনি প্রতিশ্রুতির কাছে ধোপে টেকেনি ঋষির বাস্তব পরিকল্পনা। যে কারণে দলের নানা স্তরের কর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারেনি তিনি। কিন্তু নতুন প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার পর দেশের অর্থনৈতিক সমস্যা মুখ থুবড়ে পড়লে এখন শাসক থেকে বিরোধী, প্রধানমন্ত্রী পদে পরবর্তী পছন্দ হিসেবে ফের উঠে আসছে ঋষি সুনকের নাম। তবে তালিকায় রয়েছে বরিস জনসনের নামাও।
পদত্যাগ করবেন কি প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস? পরিবর্তে কে বসবে মসনদে ? কি হবে ব্রিটেনের নিকট ভবিষ্যৎ, তার দিকেই তাকিয়ে বিশ্ব।