ছেলেবেলা থেকে আমারা সবাই শুনে এসেছি, সময় ও নদীর স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। দৈনন্দিন জীবনে তো আমরা এমনটাই দেখি। কিন্তু কেমন হতো যদি অতীতে চলে যাওয়া যেত?একেবারে ছোট্টবেলার সেই দিনগুলোতে, যখন স্কুলে বা কলেজে যেতে হতো না। কিংবা কেমন হতো যদি ঘুরে আসা যেত সুদূর ভবিষ্যতে, যেখানে কারও পক্ষে যাওয়া কোনো দিনই সম্ভব ছিল না।বর্তমান সময়টা ধীরে ধীরে এতটাই উন্নতির পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যে আমার যদি ভবিষ্যতে যেতে চাই তাহলে না যাওয়াটা সেখানে অসম্ভব কিছু না।
বিজ্ঞানী আইনস্টাইনও প্রমাণ করেছেন সময় কারও জন্য স্থায়ী নয়। কারোর কাছে সময় অতি জলদি অতিবাহিত হয়ে যায় আবার কারো কাছে সময় অনেক দেরিতে অতিবাহিত হয়। যদি এই সময়ের বেগ বাড়িয়ে নিয়ে যেত তাহলে ভবিষ্যতেও পরিভ্রমণ করা সম্ভব হত। অবশ্য এই কথা আইনস্টাইনের আগেও অনেক বিজ্ঞানী বলে গেছেন। এঁদের মধ্যে বিখ্যাত ছিলেন ব্রিটিশ লেখক হারবার্ট জর্জ ওয়েলস। লোকে তাঁকে এইচ জি ওয়েলস বা ওয়েলস নামেই বেশি চেনে। ১৮৯৫ সালে প্রকাশিত হয়েছিল ওয়েলসের দ্য টাইম মেশিন। এই বইয়ে আছে পরিভ্রমণের এক আশ্চর্য গল্প। এটি পরিষ্কার যে টাইম মেশিন সাধারণ কোনো ঘটনা নয়, এটি প্রকৃতিবিরোধী। মজার ব্যাপার হলো, আইনস্টাইনের থিওরি অনুযায়ী যে বিশেষ ক্ষেত্রগুলোর উপস্থিতিতে টাইম মেশিন সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে, তার সবকিছু আবার স্টিফেন হকিংয়ের কোয়ান্টাম তত্ত্ব সাপোর্ট করছে না। তবে আইনস্টাইন, স্টিফেন হকিং, থর্নের মতে, ওয়ার্মহোল বাস্তবে পাওয়া সম্ভব হলে এটা দিয়েই টাইম মেশিন সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হবে বলে মত তাদের। তাই ক্লিয়ারলি বললে, সায়েন্টিফিক থিওরি অনুযায়ী টাইম মেশিন সম্ভব, তবে বাস্তবিক অর্থে আলোর গতিতে না পৌঁছাতে পারলে সম্ভব না। সেক্ষেত্রে , এমন একটি টাইম মেশিন বানাতে হবে যেখানে আলোর গতির কাছাকাছি গতি অর্জন করা সম্ভব।
টাইম ট্রাভেল বা সময় পরিভ্রমণ বলতে সহজ ভাষায় অতীতে বা ভবিষ্যতে যেতে পারাকে বোঝায়।কেউ যদি ২০০০ সালে ফিরে যেতে পারে বা ২০৩০ সালের পৃথিবীতে চলে যেতে পারে, তবে এটিকেই টাইম মেশিন বলা হচ্ছে। শুনতে যতটা সহজ লাগছে বাস্তবে কিন্তু ততটা সহজ না। আবার অসম্ভব কিছুও না!টাইম মেশিন যে সম্ভব, এটা প্রমাণ করা পদার্থবিজ্ঞানীদের কাছে এখনও একটা বড় চ্যালেঞ্জ।