বর্তমানে সারা রাজ্যে শিক্ষা, চাকরি নিয়ে যে দুর্নীতি ঘটে চলেছে সে কথা কারোর ই অজানা নয়। প্রায়শই এ ধরণের ঘটনার খবর শোনা যায় আজকাল। এবার পিএইচ ডি- তে আসন পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করল সিঁথি থানার পুলিশ। জানা যায়, মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনায়, এক ব্যাক্তির কাছ থেকে কলকাতার ই এক বাসিন্দা সেই ব্যাক্তি এবং তাঁর স্ত্রীকে পিএইচ ডি-তে আসন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মোট ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। পুলিশি সূত্রে খবর অভিযুক্তরা এই ঘটনায় নকল স্ট্যাম্প এবং ভুয়ো নথিপত্র ব্যবহার করেছিল। সেই ব্যাক্তি গত এপ্রিল মাসে থানায় এই বিষয় নিয়ে থানায় অভিযোগ জানায়। এতদিন ধরে তদন্ত চালানোর পর জুলাই মাসে দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একজনের নাম পিন্টু রানা এবং অপরজন মণিগ্রীব বাগ। তবে তাঁরা একা নয় তাঁদের পিছনে আরো অনেকে যুক্ত বলে অনুমান করা হচ্ছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে প্রথম পিন্টু রানাকে গ্রেফতার করা হয় গত ৫তারিখ এবং একে জিজ্ঞাসাবাদ করেই খবর পাওয়া যায় মণিগ্রীব বাগের। তবে পিন্টু রানা এখনো পুলিশি হেফাজতে আছে তাকে আজ অর্থাৎ শুক্রবার আদালতে তোলার কথা রয়েছে। কিন্তু মণিগ্রীব বাগ যিনি পেশায় একজন শিক্ষক তিনি তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কথা আদালতকে জানায় তবে পুলিশ জেল হেফাজতের আবেদন করলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে মণিগ্রীবকে বিচারক জামিন করিয়ে দেন।
পুলিশ মারফত খবর, গত এপ্রিল মাসে তাঁদের কাছে শুভঙ্কর মান্না নামে এক ব্যাক্তি এই বিষয় নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, ২০০৮সালে কলকাতার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি এমবিএ করেন। সেইখানেই পড়াতেন ওই মণিগ্রীব নামক ব্যাক্তি। ওই শিক্ষক অর্থাৎ মণিগ্রীব ই জানতে চান যে শুভঙ্কর পিএইচডি করতে চান কিনা। এরপর ই ওই মণিগ্রীব নামক ব্যাক্তি পিন্টু রানার সঙ্গে শুভঙ্কর কে যোগাযোগ করতে বলেন। মণিগ্রীব নিজেও ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পিএইচ ডি করেছেন বলে দাবি করেন। নিজের প্রতিষ্ঠানের স্যার হওয়ায় শুভঙ্কর মণিগ্রীব কে কোনোরকম কোনো সন্দেহ করেননি। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যানেজমেন্টে পিএইচডি করার জন্য শুভঙ্কর পিন্টু রানা কে ৭০হাজার টাকা দেয়। এরপর মণিগ্রীব শুভঙ্করকে নিজের ফ্ল্যাটে ডেকে একটি রশিদ ও দেন। তবে এখানেই শেষ নয় শুভঙ্করের স্ত্রী কেও একই ভাবে পিএইচডি তে আসন করে দেবেন বলে আরো ৭০হাজার টাকা নেন ওই পিন্টু রানা নামক ব্যাক্তি। তবে সেই টাকার র কোনো রশিদ শুভঙ্করকে দেননি পিন্টু রানা। এরপরেই শুভঙ্কর খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন পিন্টু বা মণিগ্রীব কেউ ই ওই বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত নয়। তখন ই থানায় এফআইআর দায় করেন শুভঙ্কর।
এফআইআর পাওয়ার পর ই তদন্তে নামে পুলিশ। তাঁরা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদেরসঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন শুভঙ্করকে দেওয়া রশিদটি নকল এবং সেখানে যে স্ট্যাম্পটি দেওয়া হয়েছিল তাও নকল। এর পরেই পুলিশ পিন্টুকে গ্রেফতার করে। এক পুলিশ অধিকারিক জানায়, পিন্টুকে জেরা করার পর ই মণিগ্রীব এর সত্য সামনে আসে এবং তাকেও গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাও করা হয়। তবে তাঁরা একা নয় এই চক্রের সঙ্গে আরো অনেকের যোগাযোগ থাকতে পারে। এই ঘটনার পর বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে বহু নথিপত্র ও উদ্ধার করা হয়েছে।