বলিউড থেকে হলিউড এবং সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি, এই ইন্ডাস্ট্রির সিনেমাগুলিই এখন পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত মাল্টিপ্লেক্স হল এবং সিঙ্গেল স্ক্রীন হলগুলিকে দখল করে রয়েছে। বাংলা সিনেমাগুলি নিজের রাজ্যের হলগুলিতেই জায়গা পাচ্ছে না এমনটাই অভিযোগ তুলেছে বাংলা সিনেমার প্রযোজক এবং পরিচালকেরা। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই সোমবার রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের পক্ষ থেকে এদিন পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত মাল্টিপ্লেক্স হল এবং সিঙ্গেল স্ক্রীন হলগুলির কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
নিয়ম মেনে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত সিনেমা হলগুলিতে বাংলা সিনেমা দেখানো হচ্ছে কি না সেই বিষয়টাই খতিয়ে দেখতে বিগত তিন বছরের রিপোর্টই চাইল নবান্ন। অর্থাৎ ২০১৯ সালের ১লা এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ১লা এপ্রিল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত মাল্টিপ্লেক্স সহ সিঙ্গেল স্ক্রীনগুলিতে কটি বাংলা সিনেমা দেখানো হয়েছে, কোন কোন সিনেমাগুলি কোন কোন সময় দেখানো হয়েছে, কত সময় ধরে বাংলা সিনেমাগুলি হলগুলিতে স্থান পেয়েছিল সেই সমস্ত রিপোর্টের নথি আগামী ৩০শে এপ্রিলের মধ্যে জমা দাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।
পশ্চিমবঙ্গের চলচিত্র আইন অনুযায়ী রাজ্যের প্রতিটি সিনেমাহলে বাংলা সিনেমার শো দেখানো বাধ্যতামূলক। পিভিআর বা আইমাক্স এর মতো বড় মাল্টিপ্লেক্স বা ছোট সিঙ্গেল স্ক্রীন হলে মূলত প্রাইম টাইমে দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে বছরে অন্তত ১২০ দিন ন্যূনতম একটি শোয়ে বাংলা সিনেমা দেখানো বাধ্যতামূলক এমনটাই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল ২০১৮ সালের পশ্চিমবঙ্গের চলচিত্র সংশোধনী আইনে। সেই নির্দেশিকা আদেও হল কর্তৃপক্ষ মেনে চলেছে কিনা সেই সেই বিষয়ই সমস্ত তথ্য জমা দাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের তরফে।
উল্লেখ্য বিষয়টি হল, বাংলা সিনেমার পরিচালক থেকে প্রযোজক এবং অভিনেতা থেকে অভিনেত্রী সবারই অভিযোগ, বাংলা সিনেমাগুলিকে রাজ্যের সিনেমা হলগুলিতে তাদের কাঙ্খিত সময় দেওয়া হচ্ছে না। বেশিরভাগ শো দেওয়া হচ্ছে হিন্দি, ইংলিশ ও সাউথ ইন্ডিয়ান সিনেমাগুলিকে। কোনও কোনও বাংলা সিনেমা, হলগুলিতে জায়গা পেলেও খুব অল্প সময়ের জন্য অথবা পরের সপ্তাহেই সেই সিনেমাটিকে সরিয়ে নতুন হলিউড, বলিউড কিংবা সাউথ ইন্ডিয়ান ইন্ডিয়ান সিনেমাগুলিকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে হল কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে অনেক সময় হল কর্তৃপক্ষ যুক্তি দিয়েছে যে বাংলা সিনেমা দেখার দর্শক সংখ্যা অনেকটাই কম এবং সেই সাথে লাভের অঙ্কও দেখান। এর ফলে বাংলা সিনেমার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত প্রযোজক এবং পরিচালকেরা। ফলত এই বাংলা সিনেমার ঐতিহ্যকে বাঁচাতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।