প্রকৃতি হল সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি। প্রকৃতি ছাড়া আমাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া বড়ই কঠিন। কারণ মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যা কিছু প্রয়োজন তার সবই প্রকৃতি থেকেই সরবরাহ করা হয়, যেমন -খাদ্য, জল ওষুধ এবং আশ্রয়ের জন্য উপকরণ। এককথায় প্রকৃতি স্বাধীন। তাই সে নিজের ইচ্ছে মত আমাদের প্রতিটি জিনিস প্রদান করে। কিন্তু এই প্রকৃতির স্বাধীন হওয়ার জন্যই হয়তো আমরা প্রকৃতির উপর অতিরিক্ত শোষণ করে বেড়ায়। কারণে-অকারনে বন কেটে দিয়ে, নদী-পরিবেশ দূষিত করে, কোথাও গিয়ে ক্ষতির ভাগীরার হতে হচ্ছে প্রকৃতিকেই । প্রকৃতি থেকে এত সুবিধা পেয়েও তার প্রতিদান না দিয়ে আমরা নিজেদের মতো প্রকৃতির উপর জোর-জুলুম বর্তায়।
অপরদিকে আধুনিকীকরণ একটি জটিল ধারণা। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সমাজের আধুনিক, বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের প্রবর্তন করা সম্ভব। এক অর্থে আধুনিকীকরণ প্রাচীন, মধ্যযুগীয় এবং আধুনিক শ্রেণীবিভাগকে প্রকাশ করে।আধুনিকীকরণের পর থেকে সমাজে বারংবার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। সংস্কৃতি থেকে কৃষি সমাজ সবেতেই উন্নতি ঘটেছে। নতুন প্রযুক্তি এসেছে সমাজে। নগরায়নের দ্রুত বিকাশের মাধ্যমে আধুনিকীকরণ শুরু হয়। কিন্তু আমরা আধুনিকীকরণের সঙ্গে তাল মিলাতে গিয়ে কোথাও ধ্বংসের মুখে ডেকে আনছি প্রকৃতিকেই। যার প্রভাব পড়ছে আমাদের ওপরেই। অবিরাম দূষণ আধুনিকীকরণের আরেকটি ফলাফল যা ধীরে ধীরে পরিবেশকে হত্যা করছে। নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে আমাদেরই। ঝড়, বৃষ্টি, অগ্নিউৎপাত, বন্যার শিকার হচ্ছি আমরাই। এসব বড় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের থেকে আমাদের কিছুটা রক্ষা করতে পারে বনভূমি, দিনের পর দিন আমরা নির্বিচারে তাও নষ্ট করে ফেলছি আধুনিকীকরণের জন্য।
এককথায় আধুনিকীকরনের জন্য আমরা আমাদের ধৈর্য হারাচ্ছি; তাই পরিবেশও তার বিশুদ্ধতা হারাচ্ছে। তবে চীনা আধুনিকীকরণ অনুসরণে মানবতা ও প্রকৃতির মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখার একটি নতুন পথ অনুসরণ করার অঙ্গীকার করেছেন। এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন সিইও সামিটে লিখিত বক্তৃতায় শি জিনপিং বলেন, “এটি শুধুমাত্র নিজেদের জন্য নয়, বিশ্বের জন্যও প্রকৃতিকে রক্ষা করা আমাদেরই দায়িত্ব।” তাই আধুনিকীকরণের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতিকেও রক্ষা করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।