উত্তর ভারত এখন ভাসছে এমনটাই বলা ভালো। যেদিকেই দেখো সেখানেই বন্যা পরিস্থিতি ই নজরে আসবে। এই প্রবল বৃষ্টি যার ফলে বন্যা পরিস্থিতি এবং ধস নামার কারণে মৃতের সংখ্যা একশো ছাড়ালো উত্তর ভারত। যেখানে শুধুমাত্র হিমাচল প্রদেশেই এক সপ্তাহের মৃতের সংখ্যা ৮০।
গত চারদিনে সারা উত্তর ভারত জুড়ে প্রবল বৃষ্টি যে ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে তা সত্যি ই মারাত্মক। দিল্লি, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ সব ই যেন জলে ভাসছে। তবে এতগুলি জায়গার মধ্যে হিমাচল প্রদেশের পরিস্থিতি খুব ই ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। এই বৃষ্টির কবল সেখানে এতটাই বেশি যে সেখানে প্রচুর জায়গায় পাহাড়ে ধস নেমে পড়ছে এমনকি সেখানের জাতীয় সড়ক এবং সেতু অবধি জলের তলায় চলে গেছে।
হিমাচল প্রদেশের নদীগুলি যেন সব ফুসছে। ইরাবরতী, বিতস্তা, শতদ্রু এবং চন্দ্রভাগা নদীগুলি যে রূপ ধারণ করেছে তা সত্যি খুব ই ভয়ানক। এরই মধ্যে ১৯৭১ সালের পর এই প্রথম সোলান উপত্যকায় বৃষ্টির পরিমানে ভাঙলো রেকর্ড। সেখানে এই রবিবার বৃষ্টির পরিমান ১৩৫ মিলিমিটার, যা গত ৫০বছরে এমন পরিমান দেখা যায়নি।
হিমাচল প্রদেশের আবহাওয়া দপ্তর সূত্রের খবর, গত ১১দিনে মোট বৃষ্টির পরিমান ২৪৯.৬ মিলিমিটার। যা সাধারণ পরিমাপের হারে ২২৬শতাংশ বেশি। একই ভাবে সিরমুরে ৩৬৭ শতাংশ, বিলাসপুরে ৩২৫ শতাংশ, সোলানে ৪২৬ শতাংশ, বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই দুর্যোগপূর্ণ ভয়াবহ পরিস্থিতিতে হিমাচলের বিভিন্ন জায়গায় ৩০০পর্যটক আটকে রয়েছে। এছাড়াও খবর,রাজ্যের ৪১টি জায়গায় ধস, এক জায়গায় মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং ২৯টি জায়গায় হড়পা বানের মতো ভয়ানক ঘটনা ঘটেছে।
এখনো অবধি ২৪টি রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। মৌসম ভবন জানায় পাঁচদিন ধরে অবিরাম বৃষ্টি হয়ে চলেছে দিল্লি, পাঞ্জাব,হিমাচল এবং উত্তরাখন্ডে। আরো বলে,বৃষ্টি পরিমাণ বাড়বে উত্তরাখণ্ড, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে তবে হিমাচলে বৃষ্টির পরিমান কিছুটা কমতে দেখা যাবে। খবর, এখনো অবধি পাঞ্জাবে মৃতের সংখ্যা আট, হরিয়ানায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে সাত।
শুধু হিমাচল, পাঞ্জাব নয় গত ২৪ঘন্টায় উত্তরাখন্ডের বিভিন্ন জায়গায় ধস নামার ফলে আহত হয়েছেন ১৩জন এবং বৃষ্টিতে নয়জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু অবধি ঘটেছে। বুধবার মৌসম ভবন রাজ্যের চারটি জেলা অর্থাৎ নৈনিতাল, উধম সিংহ নগর, চম্পাবৎ এবং পৌড়ি গঢ়বালে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছেন। অন্য দিকে, হরিদ্বার, দেহরাদূন আরো বিভিন্ন জায়গায় জারি করেছে হলুদ সতর্কতা। এর ফলে উত্তরাখণ্ড প্রশাসন জানিয়েছে, যতদিন না স্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে ততদিন পুণ্যার্থীরা কেদারনাথ যাত্রায় অনুমতি পাবেন না।
দিল্লিতে যমুনা নদীর জলস্তর ২০৫ মিটার অতিক্রম করে গেছে। হরিয়ানার হাতিকুণ্ড বাঁধ থেকে জলা ছাড়ার ফলে দিল্লিতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় পাঁচ জনের মৃত্যু ঘটেছে।