দিন কয়েক আগেই মরক্কোয় ভূমিকম্প কার্যত ধ্বংসলীলা চালিয়ে এসেছে। ভয়াবহ ভূমিকম্পের জেরে সেখানে যেন মৃত্যুমিছিল লেগে গেছে। হিসেবে দেখা গেছে গত শুক্রবার মরক্কোয় হওয়া ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন ২৬৮১ জন এবং আহত হয়েছে আড়াই হাজারেরও বেশি।
আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিমের ছোট পাহাড়ি দেশ মরক্কো। আর সেই ছোট্ট দেশেই শুক্রবার রাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের কারণে সারা দেশর মাটি কেঁপে ওঠে। তখন সেখানের স্থানীয় সময় রাত ১১টা এবং রিখটার স্কেলের মাত্রা ছিল ৬.৮। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জানিয়েছেন গত ৬০ বছরের মধ্যে মরক্কোয় হওয়া সব চেয়ে বিধ্বংসী ভূমিকম্প ছিল এটি। যার ফলে ধ্বংস হয়েছে হাজারো বাড়ি। শুধু বাড়ি নয় এই ভূমিকম্পর প্রভাব পড়েছে তিন লাখ মানুষের ওপর। গত তিন রাত ধরে খোলা আকাশের নীচেই দিন কাটাচ্ছেন হাজারো মানুষজন । মুলে ব্রাহিম, ম্যারাকেশ, কাসাব্লাঙ্কা, ইমদাল-সহ আরো বেশ কিছু জায়গায় অস্থায়ী শিবিরও তৈরি করা হয়েছে। আল হাউজ় অঞ্চলে মরক্কোর সেনা ২৪ জন চিকিৎসক, ৪৬ জন নার্স ও ৫৮ জন সামাজিক ও মানসিক বিশেষজ্ঞের সাহায্যে ত্রাণ শিবিরে থাকা মানুষজনকে সাহায্য করছে। শুধু তাই নয় যেখানে যতটা সম্ভব, সেখানে সেনার তরফে খাবার, জল, ওষুধ, কম্বল, তাঁবু ইত্যাদি পাঠানো হচ্ছে। কোথাও আবার পুলিশেকর্মীরাই রক্ত দান করছে সাধারণ মানুষদের। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর , অস্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে লোকজন বেশি আসছেন মূলত পুড়ে যাওয়া বা মুখে, হাতে, পায়ে গভীর আঘাতের চিকিৎসা করাতেই।
তবে খবর পাওয়া গেছে ম্যারাকেশ শহর থেকে কিছু দূরে থাকা গ্রামগুলির সঙ্গে যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ভূমিকম্পের পরে।সেখানকার স্থানীয় মানুষদের দাবি, উদ্ধারকারীদের পৌঁছতেই লেগে যাচ্ছে স্বাভাবিকের থেকে অনেকটা বেশি সময়। তাই উদ্ধারকাজ চালানো ও ত্রাণ পাঠানোর গতির বেগ বেশ কিছুটা কম।
ইতিমধ্যেই মরক্কোকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে স্পেন, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, জর্ডন, কাতার, ইরাক, ইরান, ইজ়রায়েল, সহ আরও অনেকে। শুধুমাত্র আর্থিক সাহায্য নয় এছাড়াও সেখানে পাঠানো হচ্ছে উদ্ধারকারীদের দল এবং নিত্যপ্রয়জনীয় সামগ্রী। আরও সাহায্য লাগলে সেগুলিও পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে, এমনই আশ্বাস দিয়েছে দেশগুলি।