মেডিক্যাল কলেজের দেওয়াল ভাঙতেই মিলল গুপ্তধন হদিস। সোনার মতো চকচকে দুটি মুদ্রার খোঁজ মিলল খোদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পনেরো দিন আগে পাওয়া সেই মুদ্রার একটি রয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এবং অন্য মুদ্রাটি নিয়ে পালিয়েছে দেওয়াল ভাঙায় যুক্ত এক শ্রমিক। তাঁকে খুঁজতে পুলিশের কাছে দ্বারস্থ হয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন রোগীর দাবি এটা কোন ধাতুর তৈরি মুদ্রা সেটি কোনভাবেই বোঝা যাচ্ছে না এটি সম্পর্কে সরকারকে জানাতে হবে তারপর তারা বুঝবে সেই মুদ্রা থেকে নিয়ে কি করা হবে। আবার মেডিকেল কলেজের একাংশের দাবি রয়েছে যে এই মুদ্রা গুলি হাসপাতালে সংরক্ষণ করে রাখা হোক। যে মুদ্রা দুটি পাওয়া গেছে , সেটির এক দিকে রাম, লক্ষ্মণ, সীতা ও হনুমান এবং অন্য দিকে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও কিছু শব্দ-সাল খোদাই রয়েছে। যা দেখে ওই মুদ্রার ঐতিহাসিক মূল্য নিয়েও কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের একাংশের মধ্যে চর্চা শুরু হয়েছে। ১৮৮ বছরের পুরনো এই মেডিক্যাল কলেজের আনাচকানাচে কোথায় কী রয়েছে, সেই সম্পর্কে কিছুই জানা নেই কর্তৃপক্ষের।
সূত্রের খবর যে, কলকাতা মেডিক্যালের অধ্যক্ষের কার্যালয়ের ঠিক পিছন দিকেই রয়েছে একটি বহুতল বাড়ি। সেই বাড়ির বয়স প্রায় পঞ্চাশ বছর। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই এখানে কেউ না থাকায় সেই বাড়িটির প্রায় ভগ্ন প্রায় দশা হয়ে পড়েছিল। একদা নার্সিং সুপারের ওই কার্যালয়। সম্প্রতি সেই বাড়িটি ভাঙা শুরু হয়েছে। সেই বাড়ির বড় পাঁচিলে বারকয়েক হাতুড়ির ঘা পড়তেই দেওয়ালের ভিতর থেকে ছিটকে আসে দু’টি গোল চাকতি। ধুলো ঝেড়ে দেখা যায়, সোনার মতোই চকচকে করেছে দু’টি মুদ্রা। যদিও কয়েনের থেকে আকারে খানিকটা বড় এই মুদ্রাটি। তখনকার মতো কোনরকম ঘটনাটি ধামাচাপা পড়লেও, দিনকয়েক পরেই হাসপাতালের কর্তাদের কানে পৌঁছতেই গুপ্তধন উদ্ধারের খবরটি চাউর হয়ে যায়। তারপরই শুরু হয় স্বর্ণমুদ্রা’র খোঁজ। আর ঠিক সেই সময়েই রাজমিস্ত্রি হাসপাতাল রাজকোষে একটি জমা দিল অন্যটি আরেকটি মুদ্রা নিয়ে পালিয়ে যান মুর্শিদাবাদে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা মুদ্রা বিশেষজ্ঞ সুতপা বিশ্বাস বলেন, স্বাধীনতার প্রাক্কালে ব্রিটিশরা কোনদিনই রাম সীতা এবং হনুমানকে নিয়ে কোনো রকম মুদ্রার অবয়ব বানানো হয়নি তাহলে মুদ্রা এলো কোথা থেকে এ বিষয়ে তিনি বলেছেন কেউ বা কারা ইচ্ছে করেই বোকা বানানোর জন্য এই ধরনের কৃত্রিম মুদ্রা বানিয়ে সেখানে রেখেছেন এই মুদ্রার কোনরকম ঐতিহাসিক মূল্য নেই বলেই ধরা যায়। কলকাতা মেডিক্যালের হাসপাতালের রাজকোষে একটি মুদ্রা রয়েছে সেই মুদ্রার ভবিষ্যৎ স্থির করতে ইতিমধ্যেই আলোচনা হয়েছে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে। এক আধিকারিকের কথা হল, এটা সরকারি সম্পত্তি। তাই হেলাফেলাও করা যাবে না।