শত্রুদের বিরুদ্ধে আরও ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চলেছে ভারত। আমেরিকার তৈরি অত্যাধুনিক ঘাতক ড্রোন কিনতে চলেছে বলে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর। আমেরিকার এই শিকারি ড্রোন কেনার সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই শিলমোহর দিয়েছে ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল (DAC)। এবার মন্ত্রীর সভার অনুমোদনের পরই শুরু হবে ড্রোন কেনার প্রক্রিয়া। সব ঠিক থাকলে চলতি মাসে নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন সফরেই এই চুক্তিতে চূড়ান্ত শিলমোহর পড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আমেরিকায় তৈরি আধুনিক এমকিউ রিপার সিরিজ়ের ড্রোন কেনার চুক্তির অঙ্ক ৩০০ কোটি ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ছুঁতে পারে বলে ওই সূত্রের খবর।
পূর্ব ইতিহাসে চোখ রাখলে দেখা যাবে, আমেরিকার এই ঘাতক ড্রোন দিয়েই দু দশক আগে তালিবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মহম্মদ ওমর, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের প্রধান বায়তুল্লা মেহসুদ থেকে হালফিলে ইরানের জেনারেল কাশেম সোলেমানি এবং আল কায়দা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরি হত্যায় ব্যবহার করা হয়েছিল এই ‘এমকিউ রিপার ড্রোন’। আর সেই সফলতার ওপর ভরসা করেই ভারত এই ড্রোনের সিরিজের ‘এমকিউ-৯বি সিগার্ডিয়ান’ সংস্করণটি কিনতে চলেছে।
আমেরিকার ‘জেনারেল অটোমিক্স অ্যারোনটিক্যাল সিস্টেমস’ নামক সংস্থার ‘এমকিউ-৯বি রিপার নামের এই ড্রোন ৫০ হাজার ফুট উচ্চতায় থেকে শত্রুর উপর আঘাত হানতে পারে।এই ড্রোনের অস্ত্রভাণ্ডারের মধ্যে রয়েছে হেলফায়ার আর৯এক্স বা ‘নরকের আগুন’। ‘নিনজা বোমা’ নামে পরিচিত এই ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যেই জাওয়াহিরিকে বধ করেছিল আমেরিকা। এ ছাড়া এই ঘাতক ড্রোনের অস্ত্রভান্ডারে রয়েছে এআইএম-৯ সাইডউইন্ডার স্বল্প পাল্লার ‘আকাশ থেকে আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্র এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন গাইডেড বোমা জিবিইউ-৩৮। এখানেই শেষ নয় ঘাতক এই ড্রোনের এক টানা ২৭ ঘণ্টা ধরে ওড়ার ক্ষমতা রয়েছে। সর্বোচ্চ বহন ক্ষমতা ১,৭৪৬ কিলোগ্রাম। অর্থাৎ, শত্রু পক্ষের এলাকার গভীরে ঢুকে হামলা চালানোর ক্ষমতা রয়েছে ‘এমকিউ-৯ রিপার’-এর। শক্রপক্ষের রেডারের নজরদারি এড়াতে সক্ষম এই হানাদার ড্রোন ৯৫০ অশ্বশক্তির ইঞ্জিনের সাহায্যে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৩০ কিলোমিটার গতিতে উড়তে সক্ষম।চালকহীন কমব্যাট এরিয়াল ভেহিকল। এতে রয়েছে ৭১২ কিলোওয়াটের টার্বোপ্রপ ইঞ্জিন। নিজের ওজনের থেকে ১৫ গুণ বেশি ওজন বইতে পারে রিপার ড্রোন।
এই ঘাতক ড্রোন হাতে এলে ভবিষ্যতে বালাকোটের ধাঁচে পাক অধিকৃত কাশ্মীর বা খাইবার-পাখতুনখোয়ায় জঙ্গি শিবিরে কোনও ঝুঁকি ছাড়াই হামলা চালাতে পারবে ভারতীয় সেনা।