Img 20221125 212537

(Image Source: BBC NEWS)

শুভবুদ্ধি জাগবে কি?

সাংখ্য দর্শনের শুরুতেই এক অদ্ভুত উক্তির উল্লেখ রয়েছে – শক্তি ছাড়া যেমন শক্তিমান ক্ষমতাহীন, ঠিক তেমনি, শক্তিমানের অস্তিত্ব ছাড়া শক্তিরও অগ্রগতি ঘটানো সম্ভব নয়। আজ পরিবেশ ও প্রযুক্তি নিয়ে লিখতে বসলে, কঠোরভাবে দ্বৈতবাদী এ দর্শনও অচিরেই আমাদের চিন্তা ভাবনায় টোকা দেয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, শক্তি কি আর শক্তিমানই বা কে?

দিন দু’য়েক আগে নাসার একটি বিবৃতি চোখে পড়লো। পৃথিবীর অন্যতম অত্যাধুনিক মহাকাশ বিজ্ঞান গবেষণা সংস্থার ভারতীয় বিজ্ঞানীদের দাবি, আগামী সাত – আট বছরের মধ্যেই চাঁদের জমিতে ঘরবাড়ি তৈরি করতে সক্ষম হবে মানবসমাজ। ২০২২-এ দাঁড়িয়ে, এটাই কি তবে শক্তি ও শক্তিমানের দ্রষ্টব্য উদাহরণ নাকি সুন্দরবনে সমুদ্রের জল বৃদ্ধির পরিমাণ দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গড়েরও প্রায় দ্বিগুণ – এটা দ্রষ্টব্য উদাহরণ?

উল্লেখিত দর্শনে বলা হয়েছে, চৈতন্যরূপী পুরুষ সাক্ষী, চেতাকেবলো নির্গুনশ্চঃ। উল্টোদিকে, পুরুষাধিষ্ঠিতা প্রকৃতি হচ্ছে চঞ্চলা, চিত্বাস্বরুপা – অর্থাৎ ঠিক যে মুহুর্তে পুরুষ চেতন হয়ে উঠবে, তার সংস্পর্শে সৃষ্টি করতে থাকবে চঞ্চলা প্রকৃতি। ঠিক যেমনটা কালে কালে করে আসছে এসি, ফ্রিজ, মোটরসাইকেল থেকে শুরু করে ফরাক্কা ব্যারেজ, পারমাণবিক বোমা। ফরাক্কা ব্যারেজ বলতে মনে পড়লো, আমাদের রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের বেশ একটা দর কষাকষি চলছে। গঙ্গা – পদ্মায় ভাঙন লেগে মুর্শিদাবাদ সহ তিন জেলার ২৮০০ হেক্টর জমি অতল গহ্বরে ইতিমধ্যেই তলিয়ে গিয়েছে। প্রতিরোধ বাবদ প্রয়োজন আনুমানিক ৫৭১ কোটি। বছর শেষেও কেন যে জলশক্তি মন্ত্রকের মঞ্জুরনামা এসে পৌঁছোচ্ছে না, এই নিয়ে গতো পনেরো দিনে বেশ কয়েকবার চিঠি চালাচালি হয়ে গিয়েছে দুপক্ষের। আখেরে প্রিন্সেপ ঘাট যেমন প্রকৃতির অঙ্গ, এ বিষয়টিও তো তাই।

সম্প্রতি মিশরের শার্ম এল শেখে অনুষ্ঠিত হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু সম্মেলন, কপ ২৭। শিল্পোন্নত দেশগুলো যতোই “না”,”আপাততো আলোচনা চলুক”, “ভারত ও চীনকেও আর্থিক সাহায্য দিতে হবে” বলে সোচ্চার হোক, দিনের শেষে সাদা কাগজে ছ’লক্ষ কোটি ডলার অবশ্যই অক্সিজেন জুগিয়েছে আফ্রিকা, উগান্ডা সহ কয়েকশো দেশগুলিকে। ভারত পৃথিবীর অন্যতম জলবায়ু বিপর্যয়-প্রবণ দেশ। আক্রান্তের হারও যেমন বেশি, আর্থিক ক্ষতিও তাই। ‘নেট জিরো’ তো দূর অস্ত, ‘লো কার্বণ দেশ’ গড়ে তোলাই এখন প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, আবার রাশিয়া – ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে গত কয়েক মাসে ইউরোপীয় দেশগুলো কয়লার মতো জীবাশ্মা জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছে প্রায় তিন গুণ। এছাড়া রাম সেতু কিংবা আদানির সিটিপি বিতর্ক তো রয়েইছে।

আসলে “শিল্পোন্নত” ও “উন্নয়নশীল” – এই দুই শব্দের টানাপোড়েনে আজ আটকে পড়েছে “প্রকৃতি”। একপক্ষ যখন নিজেদের সমস্ত ঐতিহাসিক কিংকর্তব্য মগজধোলাই করিয়ে দিতে উদ্যত, তখন আরেক পক্ষের দাবি, ক্ষতিপূরণবাবদ যতোটা মুনাফা লুটে নেওয়া যায়, সেটাই বা কম কিসের? শুরুতেই একটা প্রশ্ন করেছিলাম – এখানে শক্তিই বা কি এবং শক্তিমানই বা কে?…… প্রকৃত অর্থে, লড়াইটা প্রকৃতির সঙ্গে প্রযুক্তির কোনকালে ছিলই না। আসল লড়াই, প্রকৃতি বনাম রাজনীতি।

বাকিটা শুধুই আধুনিক দর্শন!

Sounds Interesting? Share it now!

You May Also Like

👋Hello!

Guest User

 Terms of use | Privacy | Developer

Follow us on:

Notifications

Hi Guest User, here you'll get notifications about New Updates, Announcements & more...

Mobile Marketing Pana

Become A Social Media Manager!

LinkedIn reported that social media managers are the third most in-demand marketing position by posting volume in 2022. Learn, study & Acquire Practical Experience as a Social Media Manager & Get a Free Certificate!

Create✨

Oops...Sorry !

You have to Login to start creating on Youthesta.

Don’t have an account? Register Now

Not from Behala College but still Interested? Request