দৈনন্দিন জীবনে নারী এবং পুরুষ উভয়ই পায়ে পা মিলিয়ে চলছে তা হলে, দুর্গাপুজোর সময়ই বা পিছিয়ে থাকবে কেন? রাজ্য সরকারের দেওয়া লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা জমিয়ে সেই সঞ্চিত অর্থে দশভুজার আহবানে মেতেছে এক মহিলা সমিতি। চার-পাঁচমাসের জমানো লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় এই পুজোর আয়োজন করতে চলেছেন তাঁরা। দাসপুরের রাধাকান্তপুরের মহিলারা একজোট হয়ে চালু করেছেন , ‘মহিলা পরিচালিত দুর্গাপুজো’। পাড়ায় পাড়ায় হওয়া সাধারণ প্যান্ডেল করে পুজো নয়,একদম ঝাঁচকচকে থিমের পুজো। এই পুজোতে থাকছে মহিলা পুরোহিত এবং মহিলা ঢাকি। গ্রামের মহিলাদের এই অভিনব উদ্যোগে সবাই খুব খুশি হলেও সব থেকে বেশি উৎসাহিত কচিকাঁচারা। তাঁদের কথায় , গ্রামের আশপাশে পুজো হয় না। তাই বাড়ির খুদেগুলোকে নিয়ে দূরে পুজো দেখতে যেতে হত। তাই পুজোর ক’দিন গ্রামের সবাইকে নিয়ে মেতে থাকতেই মহিলারা একজোট হয়ে পুজো করার চিন্তাভাবনা শুরু করেন।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার রাধাকান্তপুর গ্রামে প্রায় পাঁচ বছর ধরে গ্রামের মহিলাদের উদ্যোগে এই দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। উদ্যোক্তাদের দাবি, আগের পুজোর চেয়ে এখন পুজোতে এসেছে নতুনত্ব, কারণ দেবীর আরাধনার সাধ ছিলই , সাধ্য নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। সাধ আর সাধ্যের মেলবন্ধন ঘটল লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায়। রাজ্য সরকার যে লক্ষীর ভাণ্ডারের টাকা দেয় সেই টাকা সারা বছর জমিয়ে পুজোতে চাঁদা বা অনুদান হিসাবে দান করেন গ্রামের মহিলারা।আর যেমন ভাবা তেমন কাজ। এবার তাঁরা সঞ্চিত অর্থে দেবী দুর্গার পুজো করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন । গ্রামের প্রায় ৮০ জন মহিলা মিলে দেবী দুর্গার পুজোর আয়োজন করেছেন। পুজোর বাজেট এবছর আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা হলেও অধিকাংশটাই লক্ষীর ভাণ্ডারের টাকা। উদ্যোক্তাদের বক্তব্য এবছর প্রাচীন মন্দিরের আদলে তৈরি করা হচ্ছে পুজো মণ্ডপ, এমনকি আদিবাসী সম্প্রদায়ের বৈচিত্র্যকে তুলে ধরা হচ্ছে প্রতিমার মাধ্যমে।আয়োজন রয়েছে রক্তদান শিবিরের এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও।