আমার গল্প পড়া থেকে বেশি গল্প শুনতে অথবা দেখতে বরাবর ভালো লাগে। আর তা যদি হয় আমরা পছন্দের মতো সিনেমা, তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই। এবার বিষয় টা হল যে ওই যে আমি আগেই বললাম সিনেমা দেখতে বিশাল ভালোবাসি। এককথায়, সিনেমা খোড় তা সে হোক বাংলা, হিন্দি, তামিল, তেলেগু সব ধরনের সিনেমাই দেখতে ভালোবাসি। আসল বিষয় সিনেমার গল্প হওয়া চাই থ্রিলার, সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার, থ্রিলিং তাহলে তো কোনো কথাই নেই। প্রতিদিন রাতে একটা করে সিনেমা দেখা আমার এক প্রকার অভ্যাস বলাই বাহুল। তাই রোজকার মতো আজকে একটা সিনেমা দেখছিলাম যার নাম অপরিচিত। সিনেমাটা একটু পুরনো হলো সিনেমাটির মধ্যে যে রহস্যটা একদম শেষ অব্দি টেনে রেখে দিয়েছে তা সত্যিই অসাধারণ। তবে আগের দিন রাতে আরেকটা সিনেমা দেখেছিলাম যার নাম হচ্ছে তারে জামিন পার। যদিও দুটো সিনেমার মধ্যে আকাশ আর পাতার তফাৎ তাও যেহেতু এক প্রকার সিনেমার লাভার বলা যেতে পারে সে অর্থ সব ধরনের সিনেমায় দেখে থাকি আমি তবে বেশি পছন্দ সাইকোলজিকাল থ্রিলার সিনেমা।
তবে আজকে রাতে হঠাৎই যখন আমি অপরিচিত সিনেমাটা দেখছিলাম হঠাৎই তখন তারে জামিনদারের যে মুখ্য ভূমিকায় অর্থাৎ ঈশান কে দেখতে পেলাম অপরিচিত সে এক অবাক কান্ড অর্থাৎ যদি ভালো করে ব্যাপারটা বলি তাহলে অপরিচিত মুভিতে যে মুখ্য ভূমিকা ছিল অর্থাৎ রামানুজন সেই চরিত্রে নেই সেই মুখ্য ভূমিকা চরিত্রে অভিনয় করছে ঈশান। এবার গল্পটি হল ছোটবেলা থেকে মা-বাবার সাথে আদরই বড় হয়েছে এই শান ওরফে অপরিচিত সিনেমা মুখ্য ভূমিকার অভিনেতা সে আস্তে আস্তে বড় হয় এবং যুবক বয়সে তার একটি মেয়েকে পছন্দ হয় স্বাভাবিকভাবেই সে মেয়েটাকে বিয়ে প্রস্তাব দিতে চাইলে সে নিজেকে অ- সুন্দর মনে করে বলে তাই সে বরাবরই নন্দিনী কে নিজের মনের কথা বলে উঠতে পারে না এই সিনেমায় তার একটি বন্ধু ছিল তাকে অবশ্যই ইশান নিজের মনের কথা সবই বলত একদিন মনের জোর নিয়ে ঈশান নন্দিনীকে তার মনের কথা বলেই দিল কিন্তু বলল যে সে তাকে কোনদিনই এ বিষয় নিয়ে ভাবেনি স্বাভাবিকভাবেই ঈশানের মন ভেঙ্গে যায় ঈশান বরাবরই ছিল একটা শান্ত প্রিয় মানুষ ছুট ঝামেলা বা অশান্তি তার একেবারেই পছন্দ ছিল না সে একদিন রাস্তার মধ্যে অ্যাক্সিডেন্ট দেখে হঠাৎই অবাক হয়ে গিয়ে সবার কাছ থেকে সাহায্য চাইতে থাকলে যে যার কাছে ব্যস্ত হয়ে পড়ে ঠিক সেই সময় সে অনুভব করতে পারে যে কেউ কারো জন্য নয় তখনই সে কম্পিউটারের সামনে এসে তার বাড়িতে একটি সাইট দেখতে পায় যাতে সে দেখতে পায় যে যেসব লোকেরা মানুষদের সাহায্য করে না ভয় পালিয়ে যায় সেই সব লোকেদের নালিশ বানানোর একটি সাইট সে সেই মুহূর্তেই যেখানে ওই লোকটির অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিল এবং একটি রিকুয়েস্ট করার সাথেও সে তাকে অগ্রাহ্য করে চলে গেল সেই গাড়িটির নাম্বার প্লেট সহ তার ডিটেলস দিতে থাকে তার কিছুক্ষণ পরেই এটি অদ্ভুত লোক সেই সাইডে দেওয়া গাড়িটির নাম্বারের লোকটিকে মেরে দেয়। এরপরই তদন্ত শুরু হয় এরকম ভাবেই দুনিয়ার যদি সমস্ত লোক একে অপরের সাহায্য না করে অথবা একে অপরকে অবজ্ঞা করে চলে যেতে থাকে পরপর এই সাইটে তা দিতে থাকে এবং ঠিক তার পর পরই সেই লোকটি গীতার হত্যাদান্ডের মত মানুষ মারতে থাকে অবশ্য তার কিছুদিন পরে ভালো লেগে যায় নন্দিন ঈশান কে দ্বিতীয়বার প্রত্যাখ্যান করে বলে যে তারা অন্য কাউকে পছন্দ ঈশান কিছুটা দুঃখ পেয়ে যায়কিছুটা দুঃখ পায় যে নান্দিনিকে সে এত ভালবাসত সে নন্দিনী আজ অন্য কারো হয়ে গেল। ঈশান ছোটবেলা থেকে যেমন শান্তিপ্রিয় মানুষ ছিল ঠিক সে রকমই প্রত্যেকটা মানুষের সাহায্য করতে শেখ একেবারে সুশীল সুবোধ বালক বলা যেতে পারে। কিন্তু সিনেমা শেষের দিকে এসে একটা অদ্ভুত জিনিস সামনে এলো নন্দিনী যাকে ভালোবাসতো, পরপর খুনগুলো যে করছিল, এবং একই সাথে সেই সুন্দর ঈশান একটাই মানুষ। নন্দিনী কে একটি ডাক্তার বলে যে ঈশানের মানসিক সমস্যা অর্থাৎ তার একটি রোগ রয়েছে তার মাল্টিপেল ডিসঅর্ডার নামক একটি রোগ রয়েছে যা ধরুন সে নিজেকে অন্য মানুষ ভাবতে থাকে অর্থাৎ একই অঙ্গে তার ভিন্নরূপ। ডাক্তার তাকে ঠিক করার জন্য নন্দিনীকে বলে যে সর্বপ্রথম তার যে দুটো চরিত্র রয়েছে অর্থাৎ নন্দিনীকে ভালোবাসতো যে রেমো এবং খুন করত যে অপরিচিত। সে কেন নিজের মধ্যেই দুটো মানুষকে বেঁচেছে। এক হচ্ছে নন্দিনী তাকে পছন্দ করত না অন্যরকম ছেলে পছন্দ করত যার জন্য রেমো যা হয়তো চাইলে নন্দিনী, ঠিক করে নিতে পারতো এবং যেটি নন্দিনী করেছে। এবং দ্বিতীয় অপরিচিত রূপ হচ্ছে সাধারণ মানুষের জন্য যা হয়তো কোনদিনও পরিবর্তন হবার নয়।
একটা জটলা শেষ হতে না হতেই আরেক দিকে শুরু হয়ে গেল এবার বাঁধলো গোল তারে জামিন পর সিনেমা দেখতে পেলাম অপরিচিতের মুখ্য অভিনয় নায়ক কে ছোটবেলা থেকে তার মা-বাবার সাথে থাকবো এবং কার সাথে ছিল একটু তার দাদা একসাথে চারজন খুব হাসিখুশি থাকত। সে তার মাকে খুবই ভালোবাসতো সে পড়াশোনা করতে একদমই পছন্দ করত না সে চাইতো যে বাইরে জগতের সাথে পরিচিত হতে এবং বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র আঁকতে আঁকতে ভীষণ ভালোবাসতো সে। হয়তো আর পাঁচটা ছেলে মেয়ের মতো তার মাথা ছিল না। অর্থাৎ সে ছিল খানিকটা কম বুদ্ধি সম্পন্ন পাতি ভাষায় বলা যায় যাকে আব নরমাল। কিন্তু তার বাবা-মা সবসময় চাইতো যে আর পাঁচটা ছেলে মেয়ের মতো সেও যেন সবার সাথে মিলেমিশে পড়াশোনা করুক কিন্তু সব সময় চাইতো বাইরে জগতের সাথে মিশে থাকতে। অতঃপর তার রেজাল্ট খুবই বাজে আছে তাকে কারণ পড়াশোনায় তারা একদমই মন বসত না স্কুলের স্যারেরা তাদের সব সময় বকতে থাকতো এরপর তার বাবা মা সিদ্ধান্ত নিল যে তাকে বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি কথা মাত্রই কাজ হয়ে গেল তাকে ভর্তি করা হলো বোর্ডিং। সে সব সময় চাইতো যেতে সে তার মা-বাবার সঙ্গে থাকে কিন্তু মা-বাবার এই সিদ্ধান্তে সে একদমই ভেতর থেকে ভেঙে পড়ল। সে সবসময় তার মাকে কাছে না পেয়ে কষ্ট পেত। হঠাৎ তার স্কুলে একটি শিক্ষক আসে যে তার এই অসুস্থতাকে বুঝতে পেরে তার মতো করে তাকে শিক্ষিত করার চেষ্টা করে এবং তার বাবা-মাকেও বোঝায় যে তাদের জন্য আলাদা ধরনের দুনিয়া আছে এক আলাদা ধরনের পৃথিবী আছে তাদের তাদের এই পৃথিবীতে তাকে ঘুরে দেখার অধিকার তাদের রয়েছে এবং অতঃপর তার বাবা-মা বুঝতে পেরে তাকে এই বড় পৃথিবীর মধ্যে ঘুরে বেড়ানো স্বাধীনতা দেয়।
এরাম ভাবে দুটো গল্প চলছে হঠাৎই আমি শুনতে পেলাম যে কেউ যেন আমাকে ডাকছে হঠাৎ এই চোখ খুলে দেখি মা আমাকে ঘুম থেকে ডাকছে পড়তে পড়তে একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে গেছিলাম আর কি, আর এর জন্যই এই দুটো সিনেমার চরিত্র দুটিকে পুরোপুরি ভাবে পরিবর্তন করে দিয়েছে একে ওপরের সাথে মিলিয়ে দিয়েছি। তবে এমনটা যদি হত খুব একটা মন্দ হত না।