ইরানের হিজাব বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন কুড়ি বছরের তরুণী হাদিস নাজাফি, ফলাফল মৃত্যু। জানা যায়, প্রথমে মারধর এবং পরে তার মুখে ,বুকে ও ঘাড়ে নির্বিচারে ছয়বার গুলি করে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী।
ঘটনাটি ঘটার পর ইরানের হিজাব বিরোধী গণ আন্দোলনে ভাটা পড়ার বদলে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়েছে দেশের নানা প্রান্তে। সেই আগুন নেভাতে ভীষণ ভাবে তৎপর ইরান সরকার। সরকারি মতে নিহত সংখ্যা ৪১ এবং গ্রেফতার করা হয়েছে ৭৩৯ জনকে। কিন্তু ইরান হিউম্যান রাইটস বলছে অন্য কথা। তাঁদের মতে, ইতিমধ্যে ইরানের সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে মারা গেছেন অন্তত ৭৬ জন বিক্ষোভকারী এবং গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রায় ১২০০ জন । ইরান সরকারের দাবি, এই আন্দোলনকে মদত দিচ্ছে `কোমলা’ নামক ইরানের একটি বামপন্থী সংগঠন এবং কিছু জঙ্গিগোষ্ঠী। ইতিমধ্যেই ইরানের উত্তর ও উত্তর পশ্চিমের প্রদেশ থেকে একাধিক জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কোর- এর।
ইরান দেশের মেয়েদের এমন স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড ছাড়াও বিশ্বের অন্যত্র। এবার এই বিদ্রোহ ছড়ালো আরব দেশের সিরিয়াতেও। তারা বিভিন্নভাবে সমর্থন জানিয়েছেন ইরানের প্রতিবাদী মেয়েদের। মুখে মাহশার মৃত্যু নিয়ে প্রতিবাদের স্লোগান তুলে সিরিয়ার মহিলারা প্রকাশ্যে চুল কেটে হিজাব পুড়িয়ে সমর্থন করেন তাদের। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার গোল্ডেন গেট ব্রিজে বহু সংখ্যক মানুষ মানব শৃঙ্খল তৈরি করে এই আন্দোলনকে সমর্থন করেন।
ক্ষমতার মাধ্যমে আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে ইরান সরকার বেছেছেন অন্য পথ। হিজাব বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে হিজাব পন্থী আন্দোলনের টক্কর এর জমি তৈরি করছে ইরান সরকার । গণ মেসেজ ও প্রকাশ্য ঘোষণার মাধ্যমে হিজাবের সমর্থনে তৈরি করা হচ্ছে জনমত। জানা গিয়েছে, হিজাব পন্থী আন্দোলনের সমর্থকেরা ধর্মীয় চিহ্ন কে তাঁদের প্রতীক বানিয়েছেন। তাঁদের মতে, হিজাব হল মেয়েদের সম্মান ও অধিকার।