বিশ্ব লিঙ্গ বৈষম্য সমীক্ষায় আট ধাপ উপরে উঠে এলো দেড়শো কোটির দেশ ভারতবর্ষ। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া এই সমীক্ষায় বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠন (WEF) জানিয়েছে, গত বছরের তুলনায় পড়শি দেশ পাকিস্তানকে ফের একবার পিছনে ফেলে ১৩৫ থেকে ১২৭ নম্বর স্থানে উঠে এসেছে ভারত। যেখানে সারা বিশ্বে, ১৭১টি দেশের সমীক্ষায়, গড় লিঙ্গ বৈষম্য ক্ষয় ৬৮.৪%, সেখানে এই বছর ভারত নারী-পুরুষের ব্যবধান কমিয়েছে ৬৪.৩%।
তবে, কি এই লিঙ্গ বৈষম্য সমীক্ষা? কেনই বা এটির প্রয়োজনীয়তা? বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দাবি, একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যে প্রকৃত অর্থে নারী পুরুষের সমান যোগদান প্রয়োজন। এছাড়াও, এটির দ্বারা বর্তমান সময়ে স্ত্রীভ্রুন হত্যার একটি আঁচও এই সমীক্ষায় ধরা পড়ে। মূলত চারটি বিষয়ে একটি দেশের মূল্যায়ন হয়। সমাজে নারীদের অর্থনৈতিক যোগদান, শিক্ষায় অগ্রগতি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় নারীদের প্রতি সরকারের গুরুত্ব এবং সবশেষে কূটনৈতিক স্বচ্ছলতা। এই চার মানদণ্ডে, এই বছর প্রথম স্থান অর্জন করেছে আইসল্যান্ড। সারা দেশে লিঙ্গ বৈষম্য মাত্র ০.৯১২%। এরপর যথাক্রমে নরওয়ে (০৮৭৯%) এবং ফিনল্যান্ড (০.৮৬৩%)।
আট ধাপ এগিয়ে এলেও ভারতের এই উন্নতিকে একেবারেই ভালো চোখে দেখছেন না কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞের কিছু অংশ। তাঁদের একাংশের দাবি, গত বছরের তুলনায় উন্নতি হয়েছে মাত্র ১.৪%। যেখানে দেশ আমেরিকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চাঁদে মানুষ পাঠানোর দাবি করছে, সেখানে মানুষেরই গুরুত্ব কতটা, সেটাই এখন প্রশ্নের বিষয়। উপরন্তু, মণিপুর থেকে আদিপুরুষ, নানা মুণির নানা মত ছিলই। এই সমীক্ষা যেন আগুনে ঘি ঢালার কাজটি সম্পন্ন করলো।
যদিও, এই সমীক্ষা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন। ২০০৬ সাল থেকে লিঙ্গ বৈষম্যের সবথেকে পুরাতন সমীক্ষা এটিই। যেখানে, চীনের মতো দেশে কন্যাশিশু হত্যার কানাঘুষো ইতিমধ্যেই সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, সেখানে চীনের ১০৭ নং স্থান কীভাবে হয়, সেটাও বর্তমানে তর্কবিতর্কের একটি আলোচিত বিষয়। এছাড়াও, এই সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশ (৫৯), ভুটান (১০৩) এবং নেপাল (১১৬) স্থান অর্জন করেছে।
এই সমীক্ষা দাবি করেছে, যদি এভাবেই উন্নতি করতে থাকে, তাহলে একশো একত্রিশ বছরেই ভারত লিঙ্গ বৈষম্য মুক্ত একটি দেশ বলে গণ্য হবে।