রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতারেসের মানবাধিকার ও ঘৃণা ভাষণ প্রসঙ্গে কড়া বার্তা দেওয়ার দুদিনের মধ্যেই এবিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিল সুপ্রিম কোর্ট। এবিষয়ে প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। শুক্রবার সর্বোচ্চ রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ঘৃনা ভাষণ প্রসঙ্গে প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ না নিলে তা আদালত অবমাননার স্থানে পৌঁছবে এবং অবমাননার মামলা দায়ের হবে। দুটি ধর্ম সম্প্রদায়ের এই সাম্প্রদায়িক টানাপোড়েন ও ঘৃনা মন্তব্যের মাধ্যমে হিংসা ছড়ানোর প্রবণতা কে ধিক্কার জানিয়ে আদালতের বিচারপতি বলেন, “ধর্মের নামে আজ আমরা কোথায় পৌঁছে গেছি”।
ধর্মনিরপেক্ষ দেশে একটি নির্দিষ্ট ধর্ম সম্প্রদায়ের বিরূদ্ধে ঘৃনা ভাষণ, উস্কানিমূলক মন্তব্য এবং দেশজুড়ে ঘটে চলা বিভিন্ন অপরাধের প্রতিবাদে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সাংবাদিক শাহীন আবদুল্লাহ। এই অপরাধের যাতে সঠিক তদন্ত হয় সেই বিষয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়ার আবেদনও জানিয়েছিলেন তিনি। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছে জবাব চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
এবিষয়ে, আদালতে শুনানি চলাকালীন উঠে আসে বিভিন্ন ঘটনার তথ্যাবলি। বিভিন্ন রাজ্যে একটি ধর্ম সম্প্রদায়ের উপর হয়ে চলা নানান অপরাধের ঘটনা উঠে আসে। এই মামলার আইনজীবী কপিল সিব্বল, বিজেপি সাংসদ প্রবেশ বর্মার কথা টেনে আনেন যিনি ওই নির্দিষ্ট ধর্মসম্প্রদায় কে বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন। এছাড়া জগৎগুরু যোগেশ আচার্যের “গলা কেটে নেওয়া হোক” এই মন্তব্যের ও প্রসঙ্গ তোলেন তিনি।
এপ্রসঙ্গে সব দিক বিচার করে, শুক্রবার বিচারপতি কে এম জোসেফ এবং বিচারপতি হৃষিকেশ রায়, ঘৃণা-ভাষণের ঘটনাকে ‘অত্যন্ত গুরুতর বিষয়’ বলে উল্লেখ করেন। তারা মন্তব্য করেন, ” ধর্মনিরপেক্ষ দেশে ঘৃনা ভাষণের এই ঘটনা অবিশ্বাস্য। এই ঘটনা আটকানোর দায়িত্ব আদালতের। আদালত যদি সেই দায়িত্ব পালন না করে তাহলে তা আদালতের গাফিলতির পরিচয় দেবে”। সর্বোচ্চ রায়ে তারা জানান, এই ধরনের কোনো ঘটনায় যদি প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয় বা পদক্ষেপ নিতে দেরি করে তাহলে তা আদালত অবমাননা হিসাবে গণ্য করা হবে। ধর্মনিরপেক্ষ দেশে এরূপ আচরণ কখনই কাম্য নয়।