প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়।তবে রাজনৈতিক মহলে ‘জলুবাবু’ নামেই পরিচিত ছিলেন তিনি। রাজ্য বিজেপির সভাপতির পদে ছিলেন সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় । ৯০ বছর বয়সে শুক্রবার সকালে কলকাতার সানি পার্কের বাড়িতে পরলোক গমন করেন তিনি।১৯৩২ সালের ৮ মে সিলেট (এখন বাংলাদেশ)-এ জন্ম হয়েছিল সত্যব্রতের। পরবর্তীকালে সেখান থেকে চলে আসেন নদিয়ার কালীগঞ্জের পাগলাচণ্ডী গ্রামে। বর্ধিষ্ণু পরিবারের সন্তান সত্যব্রত পরিবারের অগ্রজদের মতো বেছে নেন আইনি পেশা। আইন নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তিনি । পরবর্তী কালে যোগদান করেন রাজনীতিতে।
সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় পেশায় ছিলেন আইনজীবী । আইনজীবী হিসাবে যথেষ্ট সুনাম ছিল ওনার। এছাড়াও রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ছিলেন। ২০০৮ সালে এই পদে বসেছিলেন। পরবর্তী সময়ে ২০০৯ সালে তাঁকে সরিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি হয়েছিলেন রাহুল সিংহ। অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের আমলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। ২০০০ থেকে ২০০২ সালের জুন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় রাসায়নিক ও সার মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২০০২ সাল থেকে ২০০৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এবং শিল্প মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
৮৭ বছর বয়স পর্যন্ত নিয়মিত হাই কোর্টে যেতেন সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়। দলীয় কাজকর্মের দিকেও রাখতেন খোঁজখবর। তবে বার্ধক্য জনিত কারণে মাঝে বেশ কয়েক বার চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে যার কারণে দীর্ঘ তিন বছর সব কিছু থেকে দূরে ছিলেন তিনি। প্রবীণ নেতার প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,তিনি বিবৃতি দিয়ে লিখেছেন, ‘‘বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, প্রথিতযশা ব্যারিস্টার ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় (জলুবাবু)-এর মৃত্যুতে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি”। এছাড়াও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও শোকপ্রকাশ করে, গণমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘‘বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে আমি গভীর ভাবে শোকাহত, জলু বাবু নামে পরিচিত ছিলেন। সাংসদ ছিলেন। প্রাক্তন সাংসদ এবং অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর পরিবার এবং বন্ধুদের সমবেদন জানাই।’’ নদিয়া জেলা তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস প্রাক্তন মন্ত্রীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘‘জলুদার মৃত্যুতে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত। রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকলেও ওনার স্নেহ থেকে কখনও বঞ্চিত হইনি। নদিয়া এক রাজনৈতিক অভিভাবক হারাল’’। এছাড়াও সিপিএমের নদিয়া জেলার সম্পাদক সুমিত দে এবং বিজেপির কৃষ্ণনগরের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসও শোক প্রকাশ করেছেন।