সম্প্রতি শুরু হয়েছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিসি’র সপ্তাহব্যাপী সম্মেলন। ‘গ্রেট হল ওফ দ্যা পিপল’ এ অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনের প্রথম দিনেই তুলে ধরা হয়েছে চীনের পরাক্রমের ইতিহাস। জানা গিয়েছে, এই সম্মেলনে তুলে ধরা হয়েছে গালওয়ানে ভারতীয় সেনা হত্যাকাণ্ডের কিছু অংশ। এই হত্যাকাণ্ড প্রদর্শনের মধ্যে দিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নিজের ক্ষমতা জাহির করছেন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। পাশাপাশি এই ঘটনায় চীন এবং ভারতের তিক্ততা আরও বাড়তে পারে বলেও মত একাংশের।
সূত্রের খবর, এদিনের সম্মেলনে দেখনো ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, নিহত ভারতীয় সেনাদের রক্তাক্ত দেহ। দেখা গেছে নিহত সেনাদের দেহ নদীতে ফেলে পরস্পরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দুই দেশের সেনারা। এই ভিডিও প্রদর্শনের সাথে সাথেই তাদের বীরত্বের বিবরণও দিতে দেখা যায় একজন চীন সৈনিককে যিনি ওই গালওয়ান সংঘর্ষেই আহত হয়েছিলেন। তাঁর নাম কিউই ফাবাও। বেজিং পরিচালিত এবছরের শীতকালীন অলিম্পিক্স এ ফাবাও মশাল বহন করেছিলেন। যার প্রতিবাদে অলিম্পিক্স এর উদ্বোধনী ও সমাপ্তি বয়কট করেছিল ভারত। এদিনের সম্মেলনে তাকে বীরত্বের প্রতীক হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দু বছর আগে অর্থাৎ ২০২০ সালের ১৫ই জুন গালওয়ান উপত্যকায় চীনের সাথে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে নিহত হয় ২০ জন ভারতীয় সেনা। এরপর থেকে চীন এবং ভারতের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। দু বছর কেটে গেলেও এই ঘটনার রেশ এতটুকুও কমেনি। এই পরিস্থিতিতে সিপিসির সম্মেলনে চীনের পরাক্রমের ইতিহাসে উঠে আসা গালওয়ান হত্যাকাণ্ড দুই দেশের তিক্ততার পরিবেশকে উসকে দেবে বলে মনে করছেন কূটনীতিবিদদের একাংশ।
শুধু তাই নয়, সিপিসি সম্মেলনের আগে ভারতের সাথে সীমান্ত নিয়ে সংঘর্ষে জড়ানো এবং ভারতকে সীমান্তে সেনা মোতয়েনে বাধ্য করা চীনের প্রেসিডেন্ট জিনপিং এর ক্ষমতা প্রদর্শনের চাল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিনের সম্মেলনে জিনপিং স্পষ্ট ভাবে জানান, দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বার্থে সেনাবাহিনী আরও বাড়ানো হবে এবং সেনাবাহিনীকে আরো শক্তিশালী করে তোলা হবে। কূটনিতিবিদদের মতে, চীনের সঙ্গে সীমান্ত অস্থিরতা নিয়ে বারবার আলোচনার পথ অবলম্বন করতে চেয়েছে ভারত কিন্তু এদিনের সম্মেলনে গালওয়ান প্রসঙ্গ টেনে আনার মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে সহমত পোষণ না করারই ইঙ্গিত দিয়েছে চীন।