‘আয় আমাদের অঙ্গনে অতিথি বালক তরুদল –
মানবের স্নেহ সঙ্গ নে, চল আমাদের ঘরে চল।’ –
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের কলমে ধরা দেওয়া এই রচনা সমগ্র আজ এই অবক্ষয়ের দিনে অনিবার্যভাবে প্রাসঙ্গিক। ধূসর স্নানে সিক্ত পৃথিবী আজ বাঁচতে চায়। হাহাকার করে ধরিত্রী জননী, – বাঁচাও আমার সন্তানদের। কংক্রিটের জগৎ গ্রাস করছে মানবকে। প্রকৃতির সাথে আত্মীয়তার সাদৃশ্য অনুভব করা যায় এই নিত্য সজ্জীবিত সবুজ সরল তৃণলতা, তরু গুল্ম, এই জলধারা, এই বায়ু প্রবাহ, এই সতত ছায়া লোকের আবর্তন, এই ঋতু চক্র, পৃথিবীর অনন্ত প্রাণী পর্যায় এইসবের সঙ্গেই আন্তর যোগ রয়েছে আমাদের নাড়ীৱ রক্ত চলাচলের। আধুনিকতার ছোঁয়ায় সংকটে অস্তিত্ব। অরণ্য- হনন যে আত্ম-হনন সেই বোধ মানুষের মনে জাগ্রত হয়েছে বহু পূর্বেই।
আধুনিক প্রথাগত পরিবেশচর্চার সূচনা ১৮৬৬ সালে আর্নেস্ট হেকলের হাত ধরে। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পশ্চিমী বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়ে পরিবেশ আন্দোলনের বীজ রোপন করেন রাচেন কারসন, তার ‘সাইলেন্ট স্প্রিং’ গ্রন্থে যেখানে তিনি দেখান রাসায়নিকের বিষে পাখিরা আর গান গাইবে না পৃথিবী উপহার পাবে এক ‘নীরব বসন্ত’। কিন্তু সে শুধু বই-এর কথা বইতেই সুসজ্জিত। বাস্তবে একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে ইন্টারগভর্নমেন্টাল ক্লাইমেট চেঞ্জ রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ব উষ্ণায়নের ধারা অব্যাহত। এই স্বার্থপর দুনিয়ায় মানুষ নিজের আন্তঃস্বার্থ দেখতে গিয়ে গ্রহের স্বার্থ বিপন্নতার মুখে এনে দাঁড় করিয়েছে। বিশ্বজুড়ে পরিবেশ আলোচনা ৫০ বছরের সময়কাল পেরিয়ে মধ্য বয়সে পরিণত হয়েও আদতে কোনো কাজের কাজই হয়নি। তবে কি আমরা ব্যর্থ আর কোন আশায় কি নেই তবে কি এবার গ্রহ ছেড়ে অন্য বিশ্বের বিকল্প ভাবনা করতে হবে। তবে আশাহত না হয়ে এবার জাগ্রত হবার পালা, শুধু বিশ্ব পরিবেশ দিবস, বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন আলোচনায় এই গ্রহর সত্যিই আরোগ্য সম্ভব নয়, এবার নিজের স্বার্থে পৃথিবীর প্রতিটি কোণায় কোণায় সবুজায়ন দরকার। আর নগরায়ন বনাম সবুজায়ন নয় হবে সবুজ নগরী।
এই প্রসঙ্গে শালিমারের অনন্য উদ্যোগ “মাদার নেচার, আওয়ার অনলি ফিউচার” শিরোনামে একটি ক্যাম্পেইন শুরু করছে। যা অরণ্য বিনাশ, প্লাস্টিক দূষণ, গ্লোবাল ওয়ার্মিং, ইত্যাদির মতো সমূহ বিপন্নতা থেকে মুক্তি পেতে দেশের শিশু শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী পরামর্শ গ্রহণ করবে। এই নতুন মননে- চিন্তনে জাগ্রত সেরা উদ্ভাবনী পরামর্শ ও পরিকল্পনাগুলিকে আসন্ন বছরেগুলিতে বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়িত করা হবে।