বর্তমান পরিস্থিতিতে পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্র রক্ষা টা সকল দেশের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ালেও সফলতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। মানবজাতি এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এক পা ভুল ফেললে সব ধ্বংস আর নিজেকে সামলে নিলে হয়তো রক্ষা।
এই পরিস্থিতিতে সকলেরই প্রয়োজন পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি অর্থাৎ বিভিন্ন প্রাকৃতিক উৎস যেমন: সূর্যের আলো ও তাপ, বায়ু প্রবাহ, জলপ্রবাহ, জৈব শক্তি (জৈবভর), ভূ-তাপ, জোয়ার-ভাটা, হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল ইত্যাদি নবায়নযোগ্য শক্তি গুলি কে আপন করে নেওয়া।
আমরা এখনও খনিজ সম্পদের উপর নির্ভরশীল কিন্তু এই অভ্যাসটা খুব শীঘ্রই না পরিবর্তন করতে পারলে ভবিষ্যতে হয়ত এখনের থেকেও অনেক বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে বিশ্ববাসীকে।
বর্তমানে যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে জনগণ তেমনি হু হু করে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা। কয়লা ব্যবহারের ফলে গ্যাসের নির্গমন হবে ৪ গুন।কয়লা আমদানির তুলনায় রপ্তানির পরিমাণ বেশি ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্রমশ খরচ সাপেক্ষ হয়ে উঠছে। এর বিকল্প হিসেবে জলবিদ্যুৎ, বায়ু শক্তি, সৌর শক্তিকে কাজে লাগালে বহু সমস্যার সমাধান মিলবে।
ইকনোমেট্রিক দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে বর্তমান ক্ষমতার সঙ্গে বার্ষিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি সহ আরও ১০ শতাংশ জলবিদ্যুৎ, বার্ষিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি সহ আরও ১০ শতাংশ বায়ুবিদ্যুৎ এবং ১ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধি সহ আরও ৫ শতাংশ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন যোগ করতে পারলে ভবিষ্যতে বিদ্যুতের সমস্যা হয়তো মিটে যাবে।
দেশে প্রত্যেক প্রান্তে প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পাঠানো কাজটি প্রচলিত পথে অসম্ভব, তার জন্য অপ্রচলিত শক্তিকে কাজে লাগানো দরকার । বায়ু থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ইতিমধ্যেই কয়লার প্রতিযোগি,আর এটাই ব্যবহার করা অনেক শ্রেয়।
একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, জলসেচের ক্ষেত্রে খনিজ জ্বালানিতে চলা পাম্পগুলির তুলনায় সৌরশক্তি চালিত পাম্পগুলির খরচ অনেকটাই কম। ডিজেলে ভর্তুকি দেওয়া হলেও সৌরশক্তির উৎপাদনের খরচ ডিজেলের খরচের অর্ধেক।বিনা খরচেই সৌরশক্তি চালিত পিভি পাম্পগুলি চালানো সম্ভব । রাজস্থান সরকার ২০১১ সালে গ্রামীণ এলাকায় ৫১৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প শুরু করে। প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল তিন বছরে ১০ হাজার কৃষককে ভর্তুকি মূল্যে সৌরশক্তি চালিত পাম্প দেওয়ার । এখন পর্যন্ত ৬ হাজারটি পাম্প বসানো হয়েছে। পাম্পের দামের ৮৬ শতাংশ দিয়ে দিচ্ছে সরকার নিজে। অন্যান্য কৃষককে বাকি ১৪ শতাংশ এবং প্রযুক্তি সরবরাহককে খরচ দিতে হচ্ছে। সৌরশক্তি চালিত পাম্পের ব্যবহারের ফলে কৃষকদের অনেক রকম সুবিধা হচ্ছে ।
বর্তমানে প্রচলিত শক্তি থেকে অপ্রচলিত শক্তিগুলোর ব্যবহার বাড়ালে হয়তো পরিবেশ দূষণ ও খরচ এই সকল সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।