সারা বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তির জয়জয় কার। মানুষের জীবন আজ অনেক সহজ। আজ সব জায়গাতেই পৌঁছানোর জন্য মানুষের কাছে আছে নানা রকম যানবাহন। অন্য দিকে আজ সব মানুষের ঘরেই পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। প্রত্যন্ত গ্রামে পর্যন্ত সব বাড়িতেও পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। কিন্তু এই যানবাহনের যে জ্বালানি পেট্রোল বা ডিজেল তা কিন্তু অফুরন্ত নয়। অন্য দিকে বিদ্যুৎ প্রস্তুত করার জন্য দরকার পড়ে অনেক পরিমাণে কয়লা। এই কয়লাও কিন্তু অফুরন্ত নয়। একদিন কয়লা, পেট্রোল ও ডিজেল শেষ হবেই। তখন কি থেমে যাবে পৃথিবীর জনজীবন? আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম যাতে এই সমস্ত সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয় তার জন্য জন্য ভারত সহ বিভিন্ন দেশ পুনঃনবিকরণ যোগ্য যে সমস্ত শক্তি যেমন- জলশক্তি, বায়ুশক্তি ও সৌরশক্তির ব্যাবহার বাড়াচ্ছে। অন্যদিকে যানবাহন প্রস্তুত কারি কোম্পানি গুলি পেট্রোল ও ডিজেল চালিত যানবাহনের পরিবর্তে বিদ্যুৎ চালিত যানবাহন তৈরির দিকে বেশি জোর দিচ্ছে। একই সঙ্গে পেট্রোল, ডিজেল ও কয়লার মত জ্বালানি ব্যাবহারের ফলে দূষণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। যার ফল স্বরূপ দেখা যাচ্ছে বিশ্ব উষ্ণায়ন।
বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার সবচেয়ে সহজ ও সুলভ পদ্ধতি হলো সৌরশক্তি। প্রতিনিয়ত পৃথিবীতে প্রায় সতেরো লক্ষ্য তিরিশ হাজার কোটি সৌরশক্তি পড়ে। ভারতে রাজস্থানের যোধপুরে অবস্থিত ভাদলা সোলার প্লান্ট ভারতের সবচেয়ে বড় সোলার প্লান্ট। এই সোলার প্লান্ট প্রায় ২২৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রস্তুত করে।
এছাড়াও বিদ্যুৎ প্রস্তুত করার আরও একটা সহজ উপায় জল বিদ্যুৎ। ভারতের জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত মেসেঞ্জার জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঝাড়খন্ডে অবস্থিত মাইথন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, এছাড়া হিমাচল প্রদেশে অবস্থিত দিহার জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলি উল্লেখযোগ্য। ভারতের মোট এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে।
এছাড়াও বিদ্যুৎ উদপাদনের আরও একটি উৎস হলো বায়ুশক্তি তামিলনাড়ুতে ভারতের সবচেয়ে বেশি বায়ুকল বসানো রয়েছে। এছাড়াও গুজরাতের উপকূল সংলগ্ন জায়গা জুড়ে বসানো রয়েছে বায়ুকোল। বায়ু শক্তি ভারতের মোট ইনস্টলড ইউটিলিটি পাওয়ার উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় ১০% এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৭১.৮১৪ TWh উৎপন্ন করেছে, যা মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রায় 4.43%। ক্ষমতা ব্যবহার ফ্যাক্টর ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ১৮%।
ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা ব্যাবহারের পাশাপাশি সৌরশক্তি, জলশক্তি ও বায়ুশক্তির উপর নির্ভর করছে।ভারতের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলেই বিবেচিত হচ্ছে। একই সঙ্গে পুনঃনবিকরণ যোগ্য শক্তির ব্যাবহারের ফলে দূষণ অনেকটাই কমবে বলেই আশা।